Breaking

Monday, February 12, 2018

মুখোশ থ্রিলার চটি সিরিজ পার্ট ১.৪

“আমার ভাইকে আপনি এখানে নিয়ে এসেছেন কেন? আমি জানি আপনারা ক্লাস মেট। আপনার কলেজের নাম আর ডিপার্টমেন্ট শুনেই আমি বুঝেছি আপনারা ক্লাস মেট। কিন্তু প্লীজ এখানে ওকে নিয়ে আসবেন না। আপনি জানেন না একবার কি হয়েছিল। আমার জন্য হোটেলে খাবার বরাদ্দ থাকে রাতে। ভালো মেনু দেখে ওর জন্য তুলে রেখে ওকে ডেকে খাইয়েছিলাম রাতে। সেই নিয়ে চারপাশে যা নয় তা শুনতে হয়েছে। এসব আমি নিতে পারব না। ওর ওপরও চাপ পড়ে। আমি বাঁচতে চাই...প্লিজ ওকে নিয়ে...” কথাগুলো ও পাগলের মতন আমার দিকে নিক্ষেপ করে চলেছে, কিন্তু মাগীটাকে দেখার সাথে সাথেই আমার ভেতরের পশুটাও যে জেগে উঠেছে এই মাঝ রাতে।

bd-chotigolpo

আমার পা দুটো নিজে থেকেই ধীরে ধীরে ওর দিকে এগোতে শুরু করেছে। নিজের অজান্তে মালিনীও এক পা এক পা করে পিছতে পিছতে দেওয়ালে গিয়ে ঠেকেছে। আমার চোখ ওর চোখের ওপর স্থির। আমার চোখের তারায় ওর চোখের তারা স্থির হওয়ার পর থেকেই ওর কথাগুলো কেমন যেন হোঁচট খেতে শুরু করেছে। জানি না ও আমার চোখে কি দেখেছে, কিন্তু ওর ছটফটানি আর শব্দ দুইই বন্ধ হয়ে গেল ধীরে ধীরে। আমার পদচালনা কিন্তু তখনও বন্ধ হয়নি। একেবারে ওর গায়ের ওপর গিয়ে দাঁড়িয়েছি। ওর ব্লাউজ আর ব্রায়ের ভিতর এঁটে থাকা স্তন দুটোর ওঠানামার শক্ত স্পর্শ পাচ্ছি আমার পেটের ওপরের দিকে। না এই মাগীটা বড্ড ছোট খাটো, ঠিক যেন একটা পুতুল। আমার উচ্চতা ছয় ফুট, চওড়া ছাতি, পেশী বহুল হাত আর পা, আর এই মেয়েটা, সরি মহিলাটা আমার ঠিক বুকের নিচে দাঁড়িয়ে হাঁসফাঁস করছে, উচ্চতা খুব বেশী হলে পাঁচ ফিট চার! ওর গলার স্বর মিন মিন করতে করতে থেমে গেল।

সিগারেটে একটা লম্বা টান দিয়ে ওর মুখের ওপর ধোঁয়াটা ছেড়ে দিলাম। ওর চোখ বন্ধ। সিঁথির বা পাশ থেকে দুটো অবাধ্য চুল এসে পড়েছে ওর মুখের ওপর। ওর মুখের ওপর আরেকটা ধোয়ার ঢেউ পাঠিয়ে দিয়ে ডান হাত দিয়ে চুল দুটোকে মসৃণ শ্যামলা কপালের ওপর থেকে সরিয়ে বা দিকের কানের পেছনে রেখে দিলাম। কি গরম মাগীটার কপাল। প্রানায়াম শুরুর আগে এসি বন্ধ করে দিয়েছিলাম। এখনও সেটা বন্ধ। কিন্তু আমি জানি সেটা চললেও এই মাগীটা এখন ঠিক এইভাবেই ঘামাত।

ওর বা গালের ওপর দিয়ে আমার ডান হাতের কর্কশ আঙুলগুলো একবার আলতো করে উপর থেকে নিচ অব্দি বুলিয়ে দিলাম। কথায় বলে প্রেম হঠাতই হয়। কথায় এও বলে যে শারীরিক মিলনও হঠাতই হয়। আর এটাও সত্যি যে যখন এরকম সময়ে আর এমন পরিবেশে আমার মতন কামুক একটা ছেলে আর এরকম একটা উপোষী মেয়ে বন্ধ দরজার পিছনে একে অপরের সামনা সামনি হয় তখন হঠাতই হয়ত একজনের শরীর অন্য জনের শরীরের সাথে কথা বলতে শুরু করে দেয়, একটা শরীর অপর শরীরের ভাষা বুঝতে শুরু করে দেয়।

মালিনী হয়ত এসেছিল ওর ভাইয়ের ব্যাপারেই কথা বলতে, কিন্তু এই পাঁচ মিনিটে হঠাত করেই যেন সব কিছু বদলে গেছে। ওর ঠোঁট দুটো ফাঁক হয়ে আছে, ভেজা ভেজা ঠোঁট গুলো বারবার কেঁপে কেঁপে উঠছে, কিন্তু স্বর বেরচ্ছে না। সেই সাথে এও বুঝতে পারছি যে আমি এইভাবে ওর গায়ের ওপর এসে পড়াতে ও ঘাবড়ে গেছে। একটা কি গোঙানির মতন শব্দ পেলাম। কান নামিয়ে নিলাম ওর ঠোঁটের কাছে।

মশার ডানার আওয়াজের মতন স্বর বেরচ্ছে ওর মুখ থেকে “ আমি চেঁচাব। আমাকে ছেড়ে দিন। “ আমি বেশ জোড়ের সাথে বললাম “ আমি তো আপনাকে বেঁধে রাখিনি। “ ও চোখ খুলল। আমি ওর শরীরের ওপর থেকে প্রায় তিন পা পিছিয়ে এসেছি ততক্ষণে। ওর চিবুক আর থুঁতনির নিচ থেকে একটা মসৃণ চকচকে ঘামের রেখা ওর গলা বেয়ে নেমে গিয়ে ওর ব্লাউজের গভীরে ঢুকে হারিয়ে যাচ্ছে। না সত্যি মেয়েটা মিষ্টি। সুন্দরী বলা যায় না। কিন্তু মিষ্টি। ও কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল, কিন্তু তার আগে আমার প্রশ্নটা গিয়ে ওর ওপর যেন আছড়ে পড়ল। “তোমার বয়স?” একে আর আপনি বলার মানে নেই। এই যে চার মুহূর্ত ওর সাথে ঘনিষ্ঠ হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম, আর এর মধ্যে, ও যে একবারও চিৎকার করে নি সেটা থেকেই বোঝা যায় যে ও আমাকে আপনি থেকে তুমি তে নেমে আসার অনুমতি দিয়ে দিয়েছে (সংকোচ থাকাটা স্বাভাবিক, কিন্তু সেটা আস্তে আস্তে কাটিয়ে ফেলতে সাহায্য করতে হবে। নইলে একদম হাতের কাছে আসা পাকা ফলটা হারিয়ে ফেলব।)।

এই “বয়স” নিয়ে প্রশ্ন কোনও মেয়ে কে স্বাভাবিক অবস্থায় করলে কি হত বলা শক্ত, কিন্তু ওর ক্ষেত্রে তেমন কিছু হল না। ও যেন মন্ত্র মুগ্ধ হয়ে গেছে। মিনমিন করে আওয়াজ এলো “ বত্রিশ।” মনে মনে ভাবলাম এ আমার ভারী অন্যায় হয়েছে। দুই বছর বাড়িয়ে রেখেছিলাম এই মাগীটার বয়স। ও আবার কিছু বলার চেষ্টা করতেই আমি আবার আমার প্রশ্নের তীর ছুঁড়ে দিলাম “ আমার থেকে বার বছরের বড় বলেই কি এতটা সংকোচ?(ভগবান জানে কিসের সংকোচ বোঝাতে চাইলাম। আমার নিজের কথাটা নিজের কানেই একটু কেমন যেন শোনাল। আমার চোখে যে কামনার আগুন ধিকধিক করে জ্বলছে সেটা নিশ্চই ওর চোখ এড়ায়নি। কিন্তু আমার শেষের কথাটাতে কি আমি ওকে সরাসরি কোনও প্রস্তাব দিলাম?)” ও কিন্তু সেন্সে নেই।

ওর ভিতর থেকে অন্য কেউ ওকে এখন চালনা করছে। কারণ ওর নরম অয়াক্স করা হাতের আঙ্গুল গুলো কাঁপছে অল্প অল্প। আমার প্রশ্নের উত্তরে ধীরে ধীরে মাথা নাড়াল ডাইনে বাঁয়ে। মানে না। বললাম “তাহলে এত সন্ত্রস্ত ভাব কেন?” ও কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল কিন্তু তার আগেই আমি পরের প্রশ্ন করলাম “ তুমি খুব মিষ্টি। কেউ তোমাকে বলেনি সেই কথা?” ও বা হাতের তর্জনীটা তুলে আবার কি একটা বলতে যাচ্ছিল কিন্তু তার আগেই আবার আমিই বললাম “ সত্যি মিষ্টি, আর ভীষণ গরম। (মালটাকে ধীরে ধীরে পেড়ে ফেলার সময় এসেছে। একটু স্পীড বাড়াতেই হবে এখন। যা হবার হবে। এতে যদি পাখি উড়ে যায় তো যাক। কিন্তু বিনা চেষ্টায় যদি পাখি উড়ে যায় তাহলে আফসোসের শেষ থাকবে না।) আমি বাইরের ছেলে। তুমিও বিবাহিতা আর সেটা তোমার হাতের ওই সোনার চুরি গুলো দেখেই বুঝেছি। (একটা দম নিয়ে সরাসরি প্রশ্নটা ছুঁড়ে দিলাম) কিন্তু তুমি কি সত্যি সুখি? দেখে তো তেমন মনে হয়নি। এই প্রশ্নটা আমি বার বার করব, আর কেন বার বার করব সেটা তুমি আমার পরের প্রশ্নটা শুনলেই বুঝতে পারবে। জানি আমি তোমার কাছে সম্পূর্ণ অচেনা, তবুও জিজ্ঞেস করছি, তুমি কি প্রথম দেখার আকর্ষণকে বিশ্বাস কর? (চেহারায় একটা নাটকীয় করুণ ভাব ফুটিয়ে তুলে বললাম) জানি করো না। তাই তুমি আমার মুখের দিকে একটুও খেয়াল করনি। কিন্তু হয়ত আমার বোকা বোকা অনুভূতির জন্যই তোমাকে আমি সকালে খুব মন দিয়ে লক্ষ্য করেছি। তোমার মুখের ভেতর আমি সকালেই অনেক ব্যথা দেখেছি। চেয়ারে মাথা রেখে ঘুমাচ্ছিলে তাই না? এরপর থেকে গেস্ট এলে মাথার খোঁপাটা ঠিক করে নিও। এত সুন্দর মুখের পিছনে ওই অবিন্যস্ত খোঁপাটা বড্ড বেমানান লাগে। (নিজের অজান্তেই ও একটা হাত পিছনে নিয়ে গিয়ে খোঁপাটা যেন আরেকটু ঠিক করে নিল।) ভালোবাসা শুনেছি হঠাতই হয়। আজ আমিও সেটা ... কিন্তু ...। “

এই পুরো সময়টা ওর চোখের তারা আমার চোখের তারার ওপর স্থির হয়ে রয়েছে। ওর ঠোঁট কাঁপছে, কিন্তু কথা বের করতে পারছে না। আমি আবার ওর দিকে ধেয়ে গেলাম দ্রুত “আমার তোমার কাছে এই মুহূর্তে লুকানোর কিছু নেই। প্রথম দেখার আকর্ষণ বলতে কি বুঝিয়েছি সেটা বোঝার মতন বুদ্ধি যে তোমার আছে সেটা আমি ভালো করে জানি। আরও স্পষ্ট ভাবে বলতে গেলে তোমাকে প্রথম যখন দেখলাম তখনই আমার ভেতরে অদ্ভুত একটা অনুভুতি জেগে উঠেছিল। আর এখন তুমি সেটা ভালভাবে বুঝে গেছ। আচ্ছা, আমার বয়স কম বলেই কি তোমার এত ভয়? না কি এতক্ষন চোখ বন্ধ করে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলে যে কখন আমি , একটা কুড়ি বছরের ছেলে তোমাকে রেপ করবে, আর তারপর তুমি থানায় গিয়ে সেটা জানাবে? না কি আমি তোমার চোখে আর বুকের ওঠা নামায় যা দেখেছি সেটাই ঠিক।

তুমি ঘাবড়ে গেছ ঠিকই আর তুমি মুখের ওপর একটা মুখোশ পড়েও আছ, কিন্তু কিছু জিনিস কি লুকানো যায়? আবারও বলছি, তোমায় দেখেই বোঝা যায় যে তুমি একলা, অসুখি। তুমিও চাও একজন নিজের বন্ধু। হোক না সে এক বড়লোক বাবার বিগ্রে যাওয়া …(কথাটা থামাতে বাধ্য হলাম, ওর চোখ আবার বন্ধ।) হোক না সে একজন অল্পবয়সী ছেলে... আচ্ছা তুমি কি নিয়ে কথা বলতে ভালোবাসো? চেষ্টা করে দেখতে পারো, আমি সেটাই ট্রাই করতে পারি। হতে পারে আমার এই ভালোবাসার কোনও ভবিষ্যৎ নেই। কিন্তু তাই বলে আমি ভালবাসব না কেন সেটা বলতে পার? হয়ত ভাবছ বড়লোক বাবার পয়সা ওড়াতে আমি এসেছি। তোমাকে নিয়ে দুদিন ফুর্তি করতে চাই। যদি সেটাও ভেবে আমার সাথে একটু মেশ তাতেই বা কিসের ক্ষতি সেটা বলতে পারো। এটুকু বিশ্বাস করতে পারো যে আমি জেনে বুঝে তোমার ক্ষতি কোনও দিন করব না। তাহলে? ” ওর গায়ের ওপর থেকে সরে এলাম।

আরেকটু গলা চড়িয়ে বললাম “ নিজেকে কোনও দিন আয়নাতে দেখো। এত মিষ্টি একটা মুখ শুঁকিয়ে পান হয়ে গেছে।” তারপর ওর দিকে ফিরে ওর বুকের দিকে আঙুল তুলে বললাম (ওর চোখ আধ বোজা) “আর এই শরীরটা তোমার মনের মতন শুঁকিয়ে পাংশু হয়ে গেছে। কোনও রঙ নেই এতে।” আরেকটা সিগারেট ধরালাম। ও দেওয়ালের সামনে থেকে ধীরে ধীরে টলতে টলতে এসে বিছানার ওপর বসে পড়ল ধপ করে। ওর পা দুটো একটু যেন টলছে। বুঝতে পারছি ওর বরের মুখে বহুদিন এমন কথা শোনেনি, আর ওর বরের সাথে ওর সম্পর্ক যে কি সেটা তো অনেকক্ষণ ধরে কুন্তল কে রগড়ে রগড়ে আমি বের করে ফেলেছি। আগেই তো বললাম, একটু মিষ্টি আর রাফ কথা শুনতে কোন মেয়ে না ভালোবাসে যাতে তার প্রশংসা করা হচ্ছে পরোক্ষ ভাবে? আবারও বলছি আমার বয়স যদিও অল্প তবু আমি মেয়েদের চোখের ভাষা পড়তে পারি। ওর ক্ষিদে জাগাতে আমি কোনও মতে সক্ষম হয়েছি।

অবশ্য এমন হতেই পারত যে আমি শুরু করার সাথে সাথে ও আমাকে একটা থাপ্পড় মেরে বেড়িয়ে গেল। তখন আর কি। চুপচাপ ঘুমিয়ে পড়া। একটা মেয়ে পাত্তা দিল কি দিল না সেই নিয়ে মাথা ঘামানোর মতন আমার সময় নেই আর সেই জন্য আমার জন্মও হয় নি। আর ওর কথা শুনে যদি কুন্তলও আমার সাথে বন্ধুত্ব ভেঙ্গে দেয় তো...তাতেও সত্যি আমার কিছু এসে যায় না। কিন্তু ট্রাই করে দেখতে ক্ষতি কি? এই মুহূর্তে আমার হাত ও তো খালি! তাছাড়া আমাকে এর আগেও দুই তিন জন মেয়ে আর কয়েকজন প্রাপ্ত বয়স্ক মহিলা বলেছিল যে একলা ঘরে কোণঠাসা হয়ে গেলে যে কোনো মেয়ে আমার জালে ধরা পড়বে, কারণ আমার চোখে নাকি একটা সরলতা মাখা সম্মোহনী শক্তি আছে, আমার চোখ গুলো ঠিক যেন সাপের চোখ, এক বার চোখে চোখ হলে আর চোখ ফেরানো যায় না, ঠিক যেন একটা র্যাটেল স্নেক।

আমি ওর সামনে এসে দাঁড়িয়ে সিগারেটে একটা লম্বা টান দিয়ে বললাম “ তোমার ভাইয়ের ওপর আজ অনেক অত্যাচার হয়েছে তুমি জানো তার কিছু? ওই সুনীল …” ও জিজ্ঞাসু চোখ নিয়ে আমার দিকে তাকাল। কিন্তু এখন আমাকে চুপ করতেই হবে। কারণ সুনীল আজ প্রত্যক্ষ ভাবে কিছুই করেনি। সুতরাং কিছু বললে সেটা মিথ্যা কথা বলা হবে। আর এর পর যদি জানতে পারে যে আমি মিথ্যা কথা বলছি ওর ভাইয়ের ব্যাপারে যাতে ওর মনে সেন্টিমেন্টের উদয় হয় তাহলে তো আর কথাই নেই। ও একটু থেমে বলল “ সুনীল?” বললাম “তেমন কোনও ব্যাপার নয়। তবে তোমার ভাই ভয়ে ভয়ে আছে।” আমি অনেক বার ওকে জিজ্ঞেস করেছি যে কি সমস্যা। কিন্তু ও আমাকে ঝেড়ে কিছু কাশে নি।” এরপর আমি লাস্ট ক্লাসের “””নিজের সম্পর্কে বলো””” ব্যাপারটার পুরোটা ওকে শোনালাম কারণ তাতে কোনও মিথ্যে নেই। বললাম “ সেই থেকেই আমি জানতে পারি যে তোমাদের সম্পর্কটা কি। তোমার ভাই আজ র্যাগিঙ্গের ধাক্কায় ভীষণ বিধ্বস্ত ছিল। সে আমার এক মাত্র বন্ধু এই ক্লাসে। আর… আর… (জেনে বুঝেই আমতা আমতা করলাম। এত ইমোশান আমার ভেতরে নেই।) তুমি তার দিদি যাকে আমি প্রথম বার দেখেই বোকার মতন খুব ভালবা(জেনে বুঝেই শেষ করলাম না কথাটা। একটু ইতস্তত ভাব রাখা দরকার। কাজ দেয় ভালো।)... তাই ওকে একবার তোমার সাথে দেখা করানোর জন্য এখানে নিয়ে এসেছিলাম। তখনই জানতে পেরেছি যে সুনীল তোমাদের আত্মীয় হয়। কিন্তু আর কিছুই বলে নি। কিন্তু তুমি কেন এলে না ওর সাথে দেখা করতে? গেস্টের রুমে কারোর সাথে দেখা করবে না? না কি তোমার ভাই কে এড়িয়ে যেতে চাইছ? আমি যে তোমাকে ভালোবাসি সেটা তো এখন জানালাম, কিন্তু তখন তোমার ভাই এতক্ষন অপেক্ষা করে চলে গেল, আর তুমি পাঁচ মিনিটের জন্যও আসতে পারলে না?”

একটু থেমে মুখে যতটা সম্ভব সারল্য, বিনয়, কাকুতি আর ব্যাকুল আর্তি মাখা একটা ভাব এনে বললাম “ আচ্ছা তোমার সত্যি ভালবাসতে ইচ্ছে করে না? আমি তো দেখতে পাচ্ছি যে তোমার জীবনে সব ভালোবাসা শুঁকিয়ে গেছে। তুমি নিজে সেটা বোঝো না? এমন ভাবে শুঁকিয়ে যাচ্ছ? হতেই পারে এটা দু-দিনের ভালোবাসা। ফুর্তি। কিন্তু তাতে কার কি এসে গেল? বুঝতে পারি না তোমাদের মতন মেয়েদের একটু ফুর্তি করতেও বা এত ভয় কিসের! সব সম্পর্কের কোনও নাম দেওয়া যায় না সেটা বোধ করি তুমিও জানো। আমিও বাস্তব কারনেই এই সম্পর্কের কোনও নাম দিতে চাইছি না। নাম দিলে হয়ত একটাই নাম হয়… বন্ধু। হয়ত ঘরে আসার আগে অব্দি তুমি ভাবছিলে শুধু তোমার ভাইয়ের সাথে দেখার করানোর জন্য তোমাকে আমি এখানে ডেকে ছিলাম। কিন্তু এখন আরেক বার সত্যি বলছি, আমার ছিল ঠিক দুটো উদ্দেশ্য।

এক তোমার ভাইয়ের সাথে তোমার দেখা করিয়ে তোমাদের মন যাতে হালকা হয় সেটা নিশ্চিত করা। আর দুই, যাকে প্রথম বার দেখে আমার ভালো লেগেছে তাকে আরেকটু খন নিজের চোখের সামনে দেখা। তবে এক দিক থেকে ভালোই হয়েছে যে তখন তুমি এলে না। কারণ তাহলে হয়ত তোমার চোখে চোখ রেখে এই কথা গুলো আমি কোনও দিন বলতেও পারতাম না। শুধু তোমার ভাইয়ের বন্ধু হয়েই থেকে যেতাম। আমি যে তোমারও বন্ধু হতে চাই সেটা বোধ হয় সারা জীবন অজানাই থেকে যেত। “ ও কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল কিন্তু আবার আমার কথায় থামতে বাধ্য হল “ ভয় পেও না। এমন তো হতে পারে যে আমাদের সম্পর্ক চিরকাল সবার কাছে অজানা থেকে গেল। কিন্তু তাতে কি? আমরা যে মুহূর্তগুলো এক সাথে, নিজেদের ভেতর কাটাবো তার গভীরতা তো শুধু আমরা দুজন উপভোগ করব। সেটা আমাদের দুজনের সারা জীবনের সম্পদ। কেউ জানবে না।” এই এক অদ্ভুত নিষিদ্ধ পথের গন্ধ ওর চোখে চোখ রেখে ওর নাকের ওপর ছড়িয়ে দিলাম। এইবার আমি থামলাম।

আমি সত্যিই অপ্রয়োজনে বেশী কথা বলি না, এমনকি কোনও কথাই বলি না। কিন্তু এখানে আমার প্রয়োজন আছে। আমার বাঁড়াটা যতবার ওকে দেখছে ততবার ঠাটিয়ে উঠছে। এই নরম মাগীটাকে একদম দুমড়ে মুচড়ে ভেঙ্গে ফেলে ওর ইচ্ছাতেই যতক্ষণ না বিছানায় ওঠাতে না পারছি ততক্ষণ নিজেকে পুরুষ বলে মানতে পারব না। এতটা এগিয়ে আসার পর ব্যাপারটা এখন ইগোর পর্যায়ে চলে গেছে।

আমি সিগারেটটাকে পাত্রে ফেলে দিয়ে পেছনে তাকিয়ে থ হয়ে গেলাম। কখন যে ও বিছানা থেকে নিঃশব্দে উঠে দাঁড়িয়ে নিজের শাড়ি আর সায়াটাকে কোমরের উপর উঠিয়ে নিজের ছোট ছোট লোমে ভরা শ্যামলা পা দুটোকে কোমর অব্দি সম্পূর্ণ নগ্ন করে আবার বিছানায় উঠে শুয়ে পড়েছে সেটা সত্যিই ঠাহর করতে পারিনি। আমার শ্রবন শক্তি এত ভোঁতা হয়ে গেলে তো বিপদে পড়ে যাব। ওর পা দুটো রোগা রোগা, কিন্তু বেশ গোল গোল। না এই মেয়েটাকে অন্তত একবার না চুদলেই না। কিন্তু তার আগে পা দুটোকে ভালো করে শেভ করে নিতে হবে। নির্লোম পায়ের ওপর দিয়ে জিভ বোলানোর একটা আলাদা আমেজ আছে।

শাড়ি আর সায়াটা কোমরের ওপর তুলে রাখায় দেখতে আর কিছুই বাকি নেই। সকালেই ওর অনেক কিছু দেখে এসেছি। তখন যেটা বাকি ছিল এখন সেটাও দেখতে পাচ্ছি। তবে আফসোস হল এই যে মাগীটা নিজের সব থেকে পবিত্র আর নিষিদ্ধ স্থান, অর্থাৎ গুদটাকে একটা ডোরাকাটা বাদামি রঙের পাতলা তিন কোণা শস্তা প্যানটির ভেতরে ঢেকে রেখেছে। চাপা প্যানটির দু-ধার দিয়ে অসংখ্য লম্বা লম্বা কুঁচকানো গুদের চুল বাইরে বেড়িয়ে এসেছে। বুঝলাম গুদ কামানর অভ্যাস নেই। হাঁটু মুড়ে দুটো পা দুই দিকে এলিয়ে দিয়েছে। (এসো আমাকে চুদে খাল করে দাও। সেই রকম ভঙ্গিমায় শুয়ে আছে। ) দু পায়ের ফাঁক দিয়ে দেখে বুঝতে পারলাম সকাল বেলায় ভুল বুঝিনি, এর পাছা দুটোও বেশ টাইট, কিন্তু ভীষণ রকম মোটা বা মাংসল নয়। ওর দিকে ফিরে তাকাতেই ও চোখ বন্ধ করে মাথাটা এক পাশে ঘুরিয়ে নিল।

আমতা আমতা গলায় বলল “ এই টাই তুমি আমার কাছ থেকে চাও। তাই না?” আমি আমার জায়গা থেকে নড়লাম না এক চুলও। ঝাঁপিয়ে পড়তে ইচ্ছে করছে ঠিকই, কিন্তু আজ সেই সময় নয়। পরে আরও ভালো করে খেলিয়ে অনেকক্ষণ ধরে চুদতে হবে মাগীটাকে। এখন ওর মনের কি অবস্থা সেটা ভালো করে বুঝে নেওয়া দরকার। এইবার চোখ খুলে মাথাটা সোজা করে আমার দিকে সোজাসুজি তাকাল। আমার চোখ স্থির হয়ে আছে ওর চোখের ওপর। এইবার স্পষ্ট হতাশা ভরা গলায় বলল “ ভালো বাসা, আকর্ষণ… সব বুঝি আমি। নাও, যা নিতে চাইছিলে নিয়ে নাও। কিন্তু…” আমি ওর সামনে এসে দাঁড়ালাম দু পায়ের মাঝে। কোমরে জড় করা শাড়ি আর সায়াটাকে দুহাতে ধরে জোড় করে টেনে নিচে নামিয়ে নিলাম। নগ্ন পা দুটো ঢেকে গেল কাপড়ে।

মুখে আবার একটা নাটকীয় ভাব ফুটিয়ে বললাম “তুমি খুব ভালো পড়তে পেরেছ আমার মন। আমি কি চাই সেটা এখন অবান্তর। সব থেকে আগে আমি জানতে চাই, কি বলতে গিয়ে তুমি ওই কিন্তু বলে থেমে গেলে।” ও বিছানায় উঠে বসেছে। ধরা গলায় বলল “ আমি পা ফাঁক করে তোমার সামনে শুয়ে পড়ছি। তোমার যা খুশি তাই কর আমার সাথে। রিসেপশনে একজনকে বসিয়ে রেখে এসেছি। যতক্ষণ খুশি যা খুশি কর। (ওর গলা ধরে আসছে বুঝতে পারছি।) বাঁধা দেব না। কিন্তু বিনিময়ে আমার পাঁচ হাজার টাকা চাই। আমার বরকে দিতে হবে। ওর একটা লোন আছে। সেটা শোধের জন্য। (আমি জানি কি সেই লোন।) তোমার অনেক টাকা আছে আমি জানি। এখন আমার সাথে শোয়ার বিনিময়ে কি আমাকে পাঁচ হাজার টাকা দিতে পারবে? “

বিছানায় বসা অবস্থাতেই আবার ও শাড়ি আর সায়াটাকে দুই পা বেয়ে ওপরে ওঠাতে যাচ্ছিল, কিন্তু আমি হাতের ইশারায় ওকে থামালাম। আমি হ্যাঙ্গারে ঝোলানো জিন্সের প্যান্টের পকেট থেকে মানি ব্যাগটা বের করে নিলাম। ও পাথরের মতন বিছানার দিকে মুখ নামিয়ে বসে আছে একই ভাবে। ওর পিছনে দাঁড়িয়ে আমি বললাম “এর আগে কত জনের সামনে এইভাবে পা ফাঁক করে শুয়েছ?” ঠাণ্ডা গলায় উত্তর এলো “ অনেক বড়লোক আর বড়লোকের ছেলের কাছ থেকে শয্যাসঙ্গিনী হবার প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ প্রস্তাব পেয়েছি এই হোটেলে। কিন্তু এতদিন কোনও না কোনও ভাবে ঠিক ম্যানেজ হয়ে গেছে। কোনও রকমে ইজ্জত বাঁচিয়ে চলতে পেরেছি। কিন্তু এইবার মনে হয় না আর হবে। তাই পাঁচ হাজার টাকা চাইছি। বিনিময়ে যা নিতে চাও নিয়ে নাও। শুধু আমার ভাইকে এই ব্যাপারে কিছু বলতে পারবে না। সেই টুকু বিশ্বাস কি করতে পারি তোমার ওপর? নইলে আমাকে বিষ খেতে হবে। অবশ্য তুমি টাকা না দিলে আমি এখন চলে যাচ্ছি। অন্য কেউ প্রস্তাব দিলে তার সাথেই শুতে হবে। কোনও উপায় নেই। (একটা বড় দীর্ঘশ্বাস।) তুমি ঠিকই বুঝেছ। আমি সুখি নই। আমার অনেক ব্যথা। কিন্তু এই মুহূর্তে ওকে (ওর বরের কথা বলছে) সাহায্য না করলে বসত বাড়িটা হাত ছাড়া হয়ে যাবে। তাই…”

এদিকে ওর এই আচরণের পর আমার মাথায় পর পর কয়েকটা চিন্তা আপনা থেকেই খেলে গেল। ও কি তাহলে সকাল বেলায় আমি যেভাবে ওর দিকে তাকিয়ে ঝারি মারছিলাম সেটা ধরতে পেরেছে(এটা কিছুই আশ্চর্যের নয়)? আর এখন এখানে আসার পেছনে কি ওর সেই উদ্দেশ্যটাও ছিল? মানে বড় লোক বাপের ছেলের কাছ থেকে তেমন কোনও প্রস্তাব পেলে তার সাথে শুয়ে তার থেকে কিছু টাকা নিয়ে কেটে পড়া? বড় বড় হোটেলে এই সব ব্যাপার তো হামেসাই হয়ে থাকে। আর সেই সাথে ওর ভাই কে যাতে এখানে আর কোনও দিনও না নিয়ে আসি সেই ব্যাপারে অনুরোধ করে যাওয়া? কিন্তু ওকে দেখে কিন্তু তেমন কিছু মনে হয় নি শুরুতে। তাহলে সেক্ষেত্রে ধরে নিতে হয় যে এখানে আসার পর আকস্মিকই সব ব্যাপার পরিবর্তন হয়ে গেছে। মানে এক কথায় আমি ওর ব্যাপারে আগ্রহী দেখে সেই সুযোগটা এখন কাজে লাগাচ্ছে। আপাতত ওকে আরেকটু খুঁটিয়ে বোঝা ছাড়া কোনও রাস্তা নেই।

ওর কথা শেষ করতে দিলাম না। ওর সামনে দাঁড়িয়ে নিরবে দশটা পাঁচশ টাকার নোট ওর মুখের সামনে উচিয়ে ধরলাম। আবার দুজনের চোখ দুজনের চোখের ওপর স্থির হল। ও ডান হাতটা বাড়িয়ে টাকা কটা আমার হাত থেকে নিয়ে গুনে ব্লাউজের ভেতর রেখে দিল। আবার শাড়ি আর সায়া ওঠানোর তোড়জোড় শুরু করছে দেখে ওকে বাঁধা দিয়ে (খুব কষ্ট করে গলায় আবার আবেগের রেশ টেনে) বললাম “ এক্ষুনি আমার ঘর থেকে বেড়িয়ে যাবে তুমি। তোমাকে ভালো বেসে ভুল করেছিলাম। ভালোই হয়েছে ভুলটা তুমিই ভাঙ্গিয়ে দিলে। জেনে রেখ মিলনের মুহূর্ত জন্ম নেয় ভালোবাসা থেকে। আর ভালোবাসা ব্যাপারটা আসে স্বাভাবিক আবেগে। টাকার বিনিময়ে কারোর সাথে শোয়া আমার ধাতে নেই।

(এদিকে আমার বাঁড়া অনেকক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে গেছে। ) কয়েক দিনের মধ্যেই এই হোটেল ছেড়ে আমি চলে যাব। এই টাকা কটা আমি আমার ভালোবাসার মেয়েকে দি নি। কারণ ভালোবাসা শেষ। তোমার সাথে আমার আর কোনও সম্পর্ক নেই। দিয়েছি আমার এক মাত্র বন্ধুর অসহায় দিদি কে। যে সামান্য কয়েকটা টাকার বিনিময়ে নিজেকে বেচতে চলেছিল। (ওই যে বললাম, একটু আগে অব্দি আমার একটা ক্ষীণ সন্দেহ হচ্ছিল যে ও কি সত্যিই এই হোটেলে বেশ্যা বৃত্তি করে? সেটা করলে বোধহয় আমার সুবিধাই হত। কেন সুবিধা হত সেটা এখন অবান্তর। কিন্তু না, ওর নিস্পাপ চোখ দুটো দেখে বুঝতে পেরেছি যে ও কোনও মিছে কথা আমাকে বলেনি। চোখের ভেতরে একটা তীব্র দরদ লক্ষ্য করলাম। এই চোখ আমি আগেও দেখেছি। বেশ্যা বৃত্তিতে নামার পর প্রথম দিন সব মেয়েদের চোখে এই কষ্ট দেখা যায়।) এই টাকাগুলো তোমাকে আর ফেরত দিতে হবে না। আজ যে আমার সাথে একান্তে এতক্ষন ধরে এতগুলো মিনিট কাটিয়ে গেলে, ধরে নাও এটা তারই মুল্য।”

খুব নাটকীয় ভাবে বিছানায় ধপ করে বসে পড়ে ভীষণ ক্লান্ত ভাবে বললাম “ সত্যি ভালোবাসা বলে কিছু নেই। বোকা ছিলাম আমি। তোমাদের কলকাতা প্রথম দিনেই আমাকে একটা বড় শিক্ষে দিয়ে দিল। এর পর থেকে মেয়েদের সাথে অনেক বুঝে শুনে মিশব।” ও নিরবে একটা হাত আমার বা কাঁধের ওপর রাখল, কিন্তু এখন গললে চলবে না, এখন কাঠিন্য দেখানোর সময়। নাটকীয় ভাবে এক ঝটকায় ওর হাতটা আমার কাঁধের ওপর থেকে সরিয়ে দিলাম। এটা ইনভেস্ট করছি। ফল পাব পরে, আর এতে আমার কোনও সন্দেহ নেই। আমি বিছানা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে ইশারায় ওকে বেড়িয়ে যেতে বললাম ঘর থেকে। ও টাকাটা ফেরত দিল না। নিরবে বেড়িয়ে গেল ঘর থেকে। ওর মুখে ভেঙ্গে পড়ার ছাপ স্পষ্ট। আমি কিস্তি মাত করে ফেলেছি তাতে সন্দেহ নেই। এই জন্যই বলে সময়ের আগে ঝাঁপিয়ে পড়তে নেই। অপেক্ষা করতে হয় কারেক্ট সময়ের। তখন তাড়িয়ে তাড়িয়ে খাও তোমার ফল।

উফফ একদিনের জন্য এনাফ নাটক করেছি। এইবার ঘুম। শোবার আগে আলমারিটা খুলে বাদামি রঙের ডাইরিটা একবার দেখে নিলাম। কুন্তল বেড়িয়ে যাবার পর বেশ কয়েকটা কথা লিখেছি এতে। সেই লেখাগুলোতে একবার চোখ বুলিয়ে নিলাম, একটু রিভিশন দিয়ে নিলাম আর কি। হুম, ঠিক আছে। আর একটা ভুল হয়ে গেছে আমার সেই ভয়ানক মোবাইলটা বাইরে টেবিলে রাখা ছিল। মনে হয় না মালিনী সেটা খেয়াল করেছে। খেয়াল করে থাকলে পরে এই নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়ার একটা ক্ষীণ সম্ভাবনা থেকে যায়। যাক গে তখন দেখা যাবে খন। এর পর থেকে আরও সাবধান হয়ে যেতে হবে। ছোট মোবাইলে অ্যালার্মটা সেট করে দিলাম। মনে মনে অনেকগুলো চিন্তা সাজাতে সাজাতে বিছানায় শুয়ে পড়লাম আলো নিভিয়ে। কাল সকালে চারটার আগেই উঠতে হবে। ঘুমানোর আর বেশী সময় পাব না।

মোবাইল বেজে ওঠার আগেই অবশ্য আমার ঘুম ভেঙ্গে গেছে। ট্যাঁকঘড়িতে দেখলাম ৩ টে বেজে ২০। আমার আরেকটু পরে ওঠার অভ্যাস, কিন্তু একবার ঘুম ভেঙ্গে গেলে আর শুয়ে থাকতে পারি না। নতুন জায়গা বলেই বোধহয় ঘুমটা একটু আগেই ভেঙ্গে গেছে। সময় নষ্ট না করে বাথরুমে ঢুকে ফ্রেশ হয়ে বেড়িয়ে এলাম। ঘড়ি বলছে এখন সময় ৩ টে ৩০। রাস্তার দিকের স্লাইডিং জানলাটা খুলে বাইরেটা দেখে নিলাম। রাস্তায় দু তিনটে কুকুর ছাড়া আর কিছুই নেই। কোনও গাড়ি ঘোড়াও দেখা যাচ্ছে না। হোটেলে ঢোকার মেইন গেটটাও বন্ধ।

হোটেলের বিল্ডিং আর বাইরের সুউচ্চ পাঁচিলের মাঝে বেশ কয়েকটা দামী গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে। অনুমান করা শক্ত নয় যে সকালে গ্রাউন্ড ফ্লোরে বিল্ডিঙে ঢোকার বা বেরনোর যে চারটে দরজা দেখেছিলাম সেগুলও বোধহয় এখন বন্ধ থাকবে। পারফেক্ট। ট্র্যাক সুট আর একটা হাত কাটা টি শার্ট পরে গলায় একটা মোটা তোয়ালে জড়িয়ে নিয়ে রেডি হয়ে নিলাম। ট্যাঁকঘড়িটার দম প্রায় শেষ। সেটাতে দম দিতে লাগল ১০ সেকন্ড আর আমার দামী মোবাইল আর ক্যাম্বিশের ব্যাগদুটো কে আলমারি বন্দী করে তাতে তালা মারতে লাগল আরও কয়েক সেকন্ড। স্পোর্ট শু টা পায়ে গলিয়ে নিলাম। রেডি। ৩ তে ৩৫ বেজেছে ছোট মোবাইলের ঘড়িতে। টাইমার সেট করলাম।

হোটেলের বাইরে বড় রাস্তায় পা দিয়েই বেশ একটা ভালো অনুভুতি হল। মোবাইলে একবার টাইমারটা দেখে নিয়েই ওটাকে অফ করে দিলাম। একটা নতুন অ্যাঁলার্ম সেট করে দিয়ে দৌড় শুরু করলাম। ভোরের বাতাস বেশ ঠাণ্ডা। ফুরফুর করে হাওয়া দিচ্ছে। রাস্তা যদিও খালি আর অন্ধকার তবুও ল্যাম্পের আলোতে বড় রাস্তার ধারে সারি বেঁধে দাঁড়িয়ে থাকা ছোট বড় দোকানগুলোর ফলকের ওপর লেখা নামগুলো পড়তে অসুবিধা হল না। কিছু দোকানের নাম অবশ্য গত কালই মুখস্থ হয়ে গেছে। বাকি গুলো এখন করে নিলাম।

অবশ্য শুধু রাস্তার বা হাতের দোকানগুলোর ওপর এখন আমার নজর। ফিরতি পথে ডান দিকের দোকানগুলোর ওপর চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাবে। বড় রাস্তার ধারে বেশ কয়েকটা বড় বড় গলি বা রাস্তা ঢুকে গেছে। সেইগুলোও খেয়াল রাখতে হবে। তবে সেই গলি বা রাস্তা গুলো গিয়ে কোথায় উঠছে সেটা এক দিনে বোঝা সম্ভব নয়। শুধু গলির জায়গাগুলো মনে রাখলেই হবে। পরে ঘরে বসেই সেই গলি বা রাস্তা গুলো কোথায় গিয়ে উঠছে সেটা বের করে নিতে পারব। অবশ্য গলির ভেতরে কি আছে সেটা জানতে হলে ওই খানে সশরীরে যাওয়া ছাড়া গতি নেই। রাস্তায় দু তিনটে কুকুর আমাকে তাড়া করেছিল। এটা স্বাভাবিক। তৈরি ছিলাম এর জন্য। গতিটা আরও বেশ খানিকটা বাড়িয়ে নিলাম। কুকুর গুলো খানিক দূর পেছন পেছন দৌড়াল, কিন্তু যখন বুঝতে পারল যে নিজেদের পাড়ার বাইরে বেড়িয়ে এসেছে তখন আবার লেজ গুঁটিয়ে পেছনে ফিরে চলে গেল।

কুকুরদের সাথে রেস করতে আমার হেভি লাগে। বড় রাস্তার ক্রসিঙ্গে এসে পৌঁছেছি। বড় বড় ট্রাক হুঁশ হুঁশ করে বেড়িয়ে যাচ্ছে গায়ের পাশ দিয়ে। আমি দৌড় থামালাম না। আবার আরেকটা অপেক্ষাকৃত সরু কিন্তু মেইন রোডে গিয়ে পড়লাম। খেয়াল করলাম রাস্তার সমান্তরালে একটা অনুচ্চ দেওয়াল চলে গেছে। দেওয়ালের ওপর দিয়ে দেখে বুঝতে পারলাম ভেতরে একটা লেক মতন আছে। আর আছে প্রচুর গাছ পালা। ইতিমধ্যে অ্যাঁলার্ম ঘড়িটা একবার বেজে উঠেছে। দেওয়াল ডিঙিয়ে ভেতরে ঢুকে গেলাম। লেকের ঠিক সমান্তরালে সিমেন্ট দিয়ে বাঁধানো গোলাপি রঙের পর পর অনেক গুলো মসৃণ বসার জায়গা করা আছে। বুঝলাম অনেকেই এখানে সকালে বিকালে ভ্রমণ করতে আসে। বসার জায়গাগুলোর ঠিক পিছন দিয়ে লেকের সমান্তরালে একটা সরু বাঁধানো মসৃণ ইটের রাস্তা চলে গেছে।

এই রাস্তা দিয়েই বোধহয় লোক জন হেঁটে চলে বেড়ায়। আর চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে বিশাল চওড়া মাঠ যার এখানে ওখানে অনেক গুলো বড় বড় গাছ দাঁড়িয়ে আছে আর এখানে সেখানে ঘন ঝোপ ঝাড়ের সমাবেশ। লেকের গা ঘেঁষে দৌড়াতে দৌড়াতে লেকের প্রায় শেষ প্রান্তে এসে পৌঁছেছি। এখানে আর সিমেন্টের তৈরি বসার জায়গাগুলো নেই। এদিকে ঝোপ ঝাড় একটু বেশী। বেশ কয়েকটা বড় বড় প্রশস্ত গুঁড়িওয়ালা গাছও চোখে পড়ল। তারই একটার তলায় গিয়ে দাঁড়ালাম। আকাশ এখন রাঙা হতে শুরু করেছে। যদিও সূর্য উঠতে এখনও অনেক দেরী। গাছের গুঁড়ির চারপাশে বেশ উঁচু ঘন ঝোপ হয়ে রয়েছে। চারপাশটা দেখে নিয়ে মনে মনে ঠিক করে নিলাম এই জায়গাটা ঠিক আছে। তাহলে কালই...বেশী দেরী করা ঠিক হবে না। প্রায় হাঁটু সমান লম্বা ঝোপের ভেতর থেকে বেড়িয়ে এলাম। অপেক্ষাকৃত একটা পরিষ্কার জায়গায় গিয়ে দাঁড়ালাম। ঘড়ি দেখে নিলাম। আলার্মটা আবার সেট করে দিলাম। ………

অনেকক্ষণ অতিবাহিত হয়েছে। অ্যালার্ম বেজে উঠেছে। আবার অ্যালার্মটা রিসেট করে দিয়ে মাঠের ওপর বসে পড়লাম। সূর্য উঠেছে অনেকক্ষণ। বেশ কিছুক্ষণ ধরেএখানে নানান বয়সের পুরুষ মহিলার আগমনও শুরু হয়ে গেছে। কেউ কেউ একা একা হেঁটে চলে বেড়াচ্ছে, কেউ বা গ্রুপে হালকা গল্প গুজব করতে করতে। কেউ কেউ সিমেন্টের বসার জায়গাগুলোর ওপর বসে সূর্যের দিকে মুখ করে বসে আছে। আমিও সূর্যের দিকে মুখ করে বসে চোখ বুজলাম। এই স্নিগ্ধ আলোয় বসে এই ফুরফুরে বাতাস বুক ভরে নিতে নিতে মেডিটেশন করার স্বাদই আলাদা। শ্বাস প্রশ্বাস ধীরে ধীরে সংযত হতে শুরু করেছে। শরীরের ঘাম শুঁকিয়ে যাচ্ছে। শরীর ঠাণ্ডা হয়ে আসছে। চোখ বন্ধ, কানদুটো ভীষণ রকম সজাগ, কিন্তু মনের আর মাথার ভেতরটা ফাঁকা। আমার অজান্তেই কখনও বা ঘন নিঃশ্বাস ঢুকে ফুসফুস ভরিয়ে দিচ্ছে, কখনও বা ভেতরে ঢোকা বাতাস ফুসফুসের ভেতর বসে কিছুক্ষণ জিরিয়ে নিচ্ছে, আবার কখনও বা ডান নাক দিয়ে ঢোকা বাতাস বাম নাক দিয়ে সজোরে বেড়িয়ে যাচ্ছে।

এখন আর এসব ভেবে চিনতে করতে হয় না। প্রাণায়াম সেই বহু দিনের অভ্যেস। যা হবার সব আপনা থেকেই হয়। আমি শুধু মাথা আর মনটা ফাঁকা করে দিয়ে বসে আছি। শরীর আর মনটা তাজা হয়ে উঠছে। আজ অনেক কাজ। তাই দিন শুরু করার আগে সব কিছু তাজা করে নেওয়া দরকার।

Collected from: Here

1 comment:

  1. এটাই কি শেষ পার্ট ছিলো। বাকী আর কোন পার্ট নেই।

    ReplyDelete